রংপুর এক্সপ্রেস: এবার কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ নিয়ে তিন কারণে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন চামড়ার দাম গতবারের চেয়ে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তের মধ্যে কোনো ভুল ছিল না। চামড়া নিয়ে এই জটিলতা শিগগিরই কেটে যাবে বলে ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
আজ রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পত্রপত্রিকায় দেখলাম চামড়া নিয়ে একটা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আমি যখন দামটা কমালাম তখন সাংবাদিকদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া দেখেছি দাম কেন কমালাম। ঈদ সামনে রেখে গত ৯ অগাস্ট কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের জন্য দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার, যা গতবারের চেয়ে কম হওয়ার বিষয়টি সংবাদের শিরোনামে আসে।
বাণিজ্যমন্ত্রী সেদিন ঘোষণা দেন, ট্যানারি ব্যবসায়ীরা এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়; ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কিনবেন। সারা দেশে খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকায় সংগ্রহ করবেন তারা। তবে ঈদের দিন পাড়া-মহল্লা থেকে কেনা চামড়া আড়তদারদের কাছে বিক্রি করতে গিয়ে মাথায় হাত পড়ে মৌসুমি বিক্রেতাদের। ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে আড়তে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কমতে থাকায় অনেক মৌসুমি বিক্রেতা হাজার হাজার টাকা লোকসান গুনেছেন বলেও দাবি করেন। আড়তদারদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার দাম ঠিক করে দিয়েছে ট্যানারি মালিকদের জন্য। মৌসুমি বিক্রেতারা সেই দাম মাথায় রেখে বেশি দাম দিয়ে চামড়ায় কিনে লোকসানে পড়েছেন।
আর ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, অর্থ সঙ্কট, আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতন এবং বিদেশি ক্রেতা সঙ্কটের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চামড়ার বাজারে। তিন কারণে এবার চামড়া কম বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দাম কমানোর পরও বিক্রি হচ্ছে না এর কারণ হল এক নম্বর- গতবারের চামড়া রয়ে গেছে, দুই- যারা ট্যানারি মালিক, তারা বলছে ব্যাংকের ঋণ সঠিক সময়ে পায়নি, তিন- সাভারে যে কারখানাগুলো হওয়ার কথা সেগুলো গড়ে ওঠেনি। এসব কারণেই এবার চামড়া কেনা-বেচায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা গতকাল (গত শনিবার) আশ্বাস দিয়েছেন এটা থাকবে না, ঠিক হয়ে যাবে। আমরা যে দামটা কমিয়েছিলাম আমাদের সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিল।
ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে মোটামুটি ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এর অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়। কাঁচা চামড়া রপ্তানির সুযোগ দেওয়ার চিন্তাভাবনা সরকারের আছে কিনা জানতে চাইলে বাণিমন্ত্রী বলেন, এটা চালু করলে আমাদের চামড়া শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। এ রকম কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। ব্যাংক ঋণের বিষয় ব্যবসায়ীদের কোনো সহায়তা দেওয়া হবে কিনা- এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আমাদের তো কোনো হাত নেই। এটি গ্রাহক ও ব্যাংকের বিষয়।
গত শনিবার ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেছেন যে সঙ্কট দেখা দিয়েছে তা থাকবে না, দুই একদিনের মধ্যে অবসান হবে। আজ (রোববার) থেকে অফিস খোলা, ব্যাংক খোলা, আমার মনে হয় সঙ্কটের সমাধান হবে। আগামী নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের তিন মাস আগে যে সরকার আসবে সে সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। আশা করি সকল দল এ নির্বাচনে আসবে। আমাদের দলের নেতাকর্মী এখন তৎপর রয়েছে। নির্বাচন কারো জন্য থেমে থাকবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল বলেন, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে বিএনপি নামক দলটি অস্বিত্ব সঙ্কটে পড়বে। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। একটি দল তাদের বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করি না।
রংপুরএক্সপ্রেস২৪ ডটকম |Rangpurexpress24.com is a largest online news portal in North Bengal.
news
চামড়া নিয়ে সঙ্কট
চামড়া নিয়ে সঙ্কটের ৩ কারণ দেখালেন বাণিজ্যমন্ত্রী
এই বিভাগের আরও খবর
পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন
Subscribe to:
Post Comments (Atom)