হাতুড়ি -লোহার শব্দে মুখর কামারপাড়া

admin August 20, 2018

সারাদেশ: আসন্ন কোরবানির ইদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগেরহাটের কামারিরা। কারও চোখে ঘুম নেই। দিন রাত সমানভাবে কাজ করছেন তারা। কোরবানি উপলক্ষে কামারপট্টি গরম লোহা পেটানোর শব্দে মুখরিত। হাটে বাজারে বা বাড়ির পাশে, রাস্তার ধারে বসবাসকারী লোকজনের ঘুম ভাঙছে কামারদের লোহা পেটানোর শব্দে। আর মাত্র দু’দিন বাকী পবিত্র ইদুল আজহার। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস বানাতে ছুরি, চাপাতি, দা, বটি ও কুড়াল খুব দরকার। কোরবানির আগে এ সব উপকরণ হাতের কাছে না থাকলেই নয়। সেগুলো সংগ্রহ ও প্রস্তুত রাখতে সবাই ব্যস্ত। এগুলো নতুনভাবে তৈরি ও শান দেওয়ার জন্য বাগেরহাট জেলার নয় উপজেলাসহ ৭৫াট ইউনিয়ন কেন্দ্রিক বাজারের কামার শিল্পীরা এখন সবাই ব্যস্ত।


সরেজমিনের ঘুরে দেখা যায়, কামারদের দম ফেলানোর সময় নেই এখন। একের পর এক ক্রেতা এসে দোকানে ভিড় করছে। ফলে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার কোনরকম দোকানে বসেই খেতে হয়। কামার ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দু’টি দা, একটি বটি ও একটি ছুরিতে শান দেওয়া বাবদ দু’শত টাকা রাখছেন। অন্য সময় হলে এগুলোর মূল্য ছিল এক’শত টাকা। সন্ন্যাসী বাজারের কামারিরা বলেন, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানির সময় কাজ বেশি হয়। তাই দামও একটু বেশি। যে কারণে অন্য সময়ের চেয়ে এখন আয় অনেক ভাল। তারা আরও বলেন, লাভ ক্ষতি যাই হোক পেশা টিকিয়ে রাখার জন্য সবাই আমরা কাজ করছি।

বাগেরহাটের ফয়লা বাজারের বিক্রেতা ইমান আলী বলেন, ইদের দিন ঘনিয়ে আসায় বিক্রি আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। সাধারণত বিভিন্ন এলাকার কামাররা তাদের দোকানে এসেই এ সব সরঞ্জামাদি বিক্রি করে যায়। প্রয়োজনে তারা নিজেরাও কামার শালায় গিয়ে সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। এদিকে ইদ উপলক্ষে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানির একটি ছোরা ৩৫০ থেকে ৪’শ, বিভিন্ন সাইজের চাকু ৩০ থেকে ১’শ, বটি ১’শ থেকে ৩৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম আরও বাড়বে বলে তারা জানান।

কামারিরা বলেন, সরকারিভাবে সহজশর্তে আর্থিক সহযোগিতা না থাকায় লোহা, ইস্পাত ও কয়লার মূল্য বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাবে এ শিল্প দিন দিন পঙ্গু হয়ে পড়ছে। হাট বাজারে সরঞ্জামের চাহিদা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উৎপাদন খরচ উঠছে না। তাছাড়া এ সব দ্রব্য তৈরির জন্য প্রচুর পুঁজির দরকার, যা তাদের নেই। বাড়তি পুঁজির যোগান দিতে গিয়ে গ্রাম্য মহাজন ও ফড়িয়াদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে কোন কোন সময় ব্যবসায় তাদের লোকসান দিতে হচ্ছে।

কামারিরা আরও বলেন, বছরে একবার অর্থাৎ কোরবানি ইদে আমাদের দা, বটি, ছুরি ও চাকু বিক্রি হলেও আমাদের সারা বছরের সংসার চলে না। আমরা চাই কোরবানির ইদের মত সারা বছর আমাদের তৈরি পণ্য বিক্রি করতে।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three