এক মণ ধানের দামে ১ কেজি গরুর মাংস, কৃষকের কপালে হাত

admin May 09, 2019

বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনেও কপাল পুরেছে কৃষকের। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- এমন অবস্থা চলতে থাকলে ধান চাষে আগ্রহ হারাবে কৃষক।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান বাজারে বোরো চায়না ধান বিক্রি হচ্ছে ৪২০ থেকে ৪৫০, ব্রি ধান-৫৮ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০, ব্রি -২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা দরে। যা বর্তমানে এক কেজি গরুর মাংসের দামের সমান। ধানের এমন দাম পেয়ে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের ধান চাষিরা।


জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এবার বগুড়ার ১২ উপজেলায় এক লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষাবাদ হয় এক লাখ ৮৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। আর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬০ লাখ ৫৪ হাজার টন। মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সব ধরনের কৃষি পন্যের দাম বাড়ার কারণে কৃষকের উৎপাদন খরচও বেড়েছে।


এ ব্যাপারে জেলার শিবগঞ্জের মোকামতলা এলাকার কাশিপুর গ্রামের ধান চাষি আব্দুল মান্নান পোদ্দার জানান, আমি ৪ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। এবার প্রতি বিঘা বোরো চাষে ১৪ হাজার ৫০ টাকা খরচ হয়েছে। তার মতে, এক বিঘা জমিতে বীজ বাবদ ৪শ ৫০ টাকা, হালচাষ ৮শ টাকা, চারা লাগানো ৮শ টাকা, সেচ খরচ বাবদ ১২শ টাকা, সার বাবদ ৪ হাজার টাকা, কীটনাশক বাবদ ২ হাজার টাকা, পরিচর্যা বাবদ ১ হাজার টাকা ও ধান কাটা বাবদ ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।


তিনি আরও জানান, ভালো ফলন হলে ১ বিঘা জমিতে সাধারণত ১৮ থেকে ২০ মন ধান হয়ে থাকে। সে হিসেবে ৫০০ টাকা মন হলে ২০ মন ধানের বিক্রি দাম হয় ১০ হাজার টাকা। তাই প্রতি বিঘায় প্রায় ৪ হাজারের বেশি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। তবে সবচেয়ে বেশি লোকসানে পড়েছে এ জেলার বর্গা চাষিরা। উৎপাদিত ফসলের ভাগ জমির মালিককে দেয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।


জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার হাটলাল গ্রামের কৃষক বজলুর রহমান বলেন, ঘূর্ণীঝড় ফণীর প্রভাবে বৃষ্টি পাতের কারণে অনেক ধানের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ধান কাটা বাবদ বাড়তি খরচ দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের। তাই আমাদের এবার অনেক লোকসান হচ্ছে।


বগুড়ার গোকুল এলাকার ধান চাষি আইন উদ্দিন জানান, এবার ফসল ভালো হয়েছে। কিন্তু খরচ তোলা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। পাশাপাশি শ্রমিক সংকট তো রয়েছেই। গ্রামের শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত মজুরি।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-পরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বর্তমানে আবহাওয়া ভালো থাকায় এবং কৃষি অফিসের সঠিক পরামর্শ ও কৃষকদের কঠোর পরিশ্রমে এবার জেলায় বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। যা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।


এ দিকে ধান চাষে কৃষকদের আস্থা ও উৎসাহ যোগাতে দ্রুত ধানের ন্যয্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের সুদৃষ্টি দেয়া সময়ের দাবি বলে মনে করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।



আরও দেখুন: আকাশ ছোঁয়া গোস্তের দাম ওে জনগণের প্রতিক্রিয়া >>


https://www.youtube.com/watch?v=zF8sPlXg55w

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three