অনলাইন ডেস্ক:
বিএসটিআইর মানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ৫২টি ব্র্যান্ডের ১৮ ধরনের পণ্য বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বাজারে থাকা এসব পণ্য দ্রুত অপসারণ করে ধ্বংস এবং মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার উৎপাদন বন্ধ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিএসটিআইর প্রতিবেদন শিল্প মন্ত্রণালয় প্রকাশের পর একটি রিট আবেদনে রোবববার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আগামী ২৩ মে এ্ই রিট আবেদনের পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছে আদালত। এই পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটি অয়েল মিলের তীর সরিষার তেল, গ্রিন ব্লিসিং ভেজিটেবল অয়েল কোম্পানির জিবি সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের রূপচাঁদা সরিষার তেল এবং শবনম ভেজিটেবল অয়েলের পুষ্টি সরিষার তেল।
মানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ লবণের মধ্যে এসিআই, মোল্লা সল্ট, মধুমতি, দাদা সুপার, তিন তীর, মদিনা, স্টারশিপ, তাজ ও নূর স্পেশাল নামের ব্র্যান্ডগুলো রয়েছে।
লাচ্ছা সেমাইয়ের মধ্যে রয়েছে মিষ্টিমেলা, মধুবন, মিঠাই, ওয়েলফুড, বাঘাবাড়ি স্পেশাল, প্রাণ, জেদ্দা, কিরণ ও অমৃত। নুডলসের মধ্যে রয়েছে নিউ জিল্যান্ড ডেইরির ডুডলি নুডলস।
হলুদের গুঁড়ার মধ্যে রয়েছে ড্যানিশ, ফ্রেশ, বাঘাবাড়ি স্পেশাল, প্রাণ ও সান। এসিআই ফুডের এসিআই পিওর ব্র্যান্ডের ধনিয়া গুঁড়াও রয়েছে। কাশেম ফুড প্রোডাক্টের ‘সান’ ব্র্যান্ডের চিপসও এই তালিকায় রয়েছে।
গত ২ মে শিল্প মন্ত্রণালয় এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, বিএসটিআই রোজার আগে বাজার থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে ৫২টি ব্র্যান্ডের ১৮ ধরনের নিম্নমানের পণ্য চিহ্নিত করেছে।
এসব প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে এবং অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
এরপর এসব খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার, জব্দ ও মান উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে গত ৮ মে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনশাস কনজ্যুমার সোসাইটি (সিসিএস)’র পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান একটি রিট আবেদন করেন।
পরদিন ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানিতে মানহীন খাদ্যপণ্যের তালিকা দেখে বিচারক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, “কোনো কোম্পানিই তো বাদ নাই।”
এসব পণ্যের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা জানাতে আদালত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দুজন কর্মকর্তাকে তলব করে। তলবের নির্দেশে তারা হাজির হওয়ার পর রোববার আদেশ দেয় হাই কোর্ট।