দিনাজপুর প্রতিনিধি:
ধানের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হচ্ছে। কৃষকের পাশে দাঁড়াচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এর ধারাবাহিকতায় বোরো মৌসুমের প্রায় শেষ দিকে এসে কৃষকের খেতের ধান কেটে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ।
জানা যায়, শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের গড়মল্লিকপুর গ্রামের আদিবাসী রবি টুডুর এক বিঘা জমির ধান কাটছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
কৃষক রবি টুডু এবং স্ত্রী বাসন্তী হাজদাসহ ছাত্রলীগের দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক গোলাম ইমতিয়াজ ইনানের নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জনের একটি দল জমির ধান কেটে দেন। ধান কাটার পর তা মাথায় করে কৃষক রবি টুডুর বাড়িও পৌঁছে দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে জমির মালিক রবি টুডু বলেন, ‘সকাল থেকে আমি এবং আমার স্ত্রী মিলে জমির ধান কিছুটা কেটেছিলাম। জমিতে ধান লাগিয়ে যে টাকা খরচ হয়েছে তা ধান বিক্রি করে ওঠান সম্ভব না। তাই অতিরিক্ত মজুরি দিয়ে শ্রমিক নিয়ে ধান কাটার সামর্থ্য আমার নেই। এমন সময় বেশ কিছু ছেলে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে ধান কাটার প্রস্তাব দেন। আমি এক বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছি। অল্প একটু সময়ের মধ্যেই সবাই মিলে ধান কেটে আমার বাড়িতে পৌঁছে দেয়।’
বেশ কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বেচ্ছাসেবীদের ধান কাটার দৃশ্য দেখা গেলেও তা মাথায় নিয়ে কৃষকের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার দৃশ্য এটাই প্রথম। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ধান কাটতে আসা দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের কর্মী জারিফ খান জিওন বলেন, ‘ধানের বাজার বর্তমানে কম। আবার ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি বেশি এবং স্বল্পতার কারণে অনেক কৃষকই হিমশিম খাচ্ছেন। আমরা দলের নির্দেশে এবং জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ইমতিয়াজ ইনান ভাইয়ের নেতৃত্বে এখানে এসে কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছি।’
গোলাম ইমতিয়াজ ইনান বলেন, ‘বর্তমানে কৃষকদের ধানের বাজার কম থাকায় তারা হতাশায় পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক কৃষকদের জমির ধান কেটে দেওয়ার উদ্যোগ নেই’।
‘শুক্রবার সকালে ছাত্রলীগের কর্মী ইব্রাহিম হোসেন হিমেল আমাদের জানায়, কাহারোল উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের গড়মল্লিকপুর গ্রামের আদিবাসী কৃষক রবি টুডু ও তার স্ত্রীসহ জমিতে ধান কাটছেন। আমরা খবর পেয়ে ছাত্রলীগের প্রায় ৫০ জনের মতো এসে এক বিঘা জমির ধান কেটে সেগুলো মাথায় করে ধান ভাঙানোর নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে আসি।’