রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক:
ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার শুনানির প্রথম দিনে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতারকৃত ৫ আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ঘটনার পর বিভিন্ন সময়ে তাদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) তাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, যুবলীগ কর্মী নূর হোসেন হোনা ও মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, প্রাক্তন ছাত্র ব্যাংক কর্মকর্তা কেফায়াত উল্লাহ জনি এবং প্রাক্তন ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী সাইদুল ইসলাম।
জেলা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সরকারী কৌঁসুলি (এপিপি) হাফেজ আহমেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তাদের নাম চার্জশিটে না থাকায় মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।’
এর আগে একই আদালত পিবিআইয়ের দাখিল করা ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে দেয়া চার্জশিট আমলে নেন। আগামী ২০ জুন চার্জ গঠনের দিন ধার্য করা করা হয়েছে।
এপিপি হাফেজ আহমেদ আরও জানান, ‘নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, প্রভাষক আবসার উদ্দিন, মো. শামিম, ইফতেখার উদ্দিন, নূর উদ্দিন জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
বিভিন্ন সময়ে এ মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিলসহ ১২ জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে একই মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। ভয়ভীতি দেখানোর পরও মামলাটি তুলে না নেয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে কৌঁশলে ডেকে নিয়ে মাদ্রাসার ছাদের উপর সিরাজ উদদৌলার সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত।
এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। ১০ এপ্রিল মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দেন আদালত। ২৯ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে মামলার এজাহারভুক্ত ৮ জনসহ ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করেন পিবিআই কর্মকর্তারা।