নিরাপদ পথ চাই আন্দোলন: ছোটদের থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিৎ

admin August 03, 2018

গত কয়েকদিন ধরে আপদশূন্য পথের দাবিতে সারাদেশ উত্তাল। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-ছাত্রীরা নেমে এসেছে পথে। তাদের নয় দফা বিভিন্ন দাবি দাওয়ার মূল কথাই হচ্ছে নিরাপদ সড়ক। গত রবিবার রাজধানীর রেডিসন হোটেলের কাছে বাসে ওঠার জন্য অপেক্ষমান ছাত্র-ছাত্রী উপর একটি বাস তুলে দেওয়ার ঘটনায় দুই জন নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার পর থেকেই এ আন্দোলনের সূচনা ঘটে। নিহত দুই জনই শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।


ঘটনার চতুর্থ দিন পেরিয়ে গতকাল পঞ্চম দিনেও সেই আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। সরকারিভাবে স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েও স্তিমিত করা যায়নি আন্দোলনের বেগ। ছুটির দিনেও ছাত্র-ছাত্রীরা নেমে এসেছে রাজপথে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা নিজেরাই হাতে তুলে নিয়েছে রাস্তার নিরাপত্তা। সেই লক্ষ্য তারা নিজেরাই গাড়ির ফিটনেস, ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করা শুরু করে দেয়। তাদের পরীক্ষার আওতা থেকে বাদ যায়নি মিডিয়া, পুলিশ কারোর গাড়িই। এমনকি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উন্টে পথে চলতে থাকা বাণিজ্যমন্ত্রীর গাড়িকেও ঘুরিয়ে নিতে বাধ্য করার নজীর স্থাপন করেছে শিক্ষার্থীরা!



[সড়কদুর্ঘটনা নিয়ে নৌ-মন্ত্রীর যত বিরুপ মন্তব্য]


যেসব চালকের লাইসেন্স নেই, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই সেসব পাড়ি তারা আটকে দেয়। সাথে সাথে জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত মিভিয়াকর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে তারা লজ্জার মুখে ফেলে দেয়। তাদের প্রশ্ন, আপনারাই যদি আইন না মানেন তবে অন্যরা মানবে কেন? ছাত্র-ছাত্রীদের ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনের পর থেকে টনক নড়েছে চালকদের মাঝেও। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে সুন্দর শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে রাস্তায়। এমনকি রিক্সাচালকেরা পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে রিক্সা চালাচ্ছে এমন অনেক ছবি ও ভিডিও সামাণ্ডিকে যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে।



[সড়কদুর্ঘটনা: বেপরোয়া ড্রাইভারদের বাগে আনতে হবে]


অন্যদিকে বড় গাড়িগুলোও অাইন মেনে চলতে দেখা গেছে। সর্বডানের লেইনে নিরাপদে চলতে দেখা গেছে রােগীবাহী এম্বুলেন্সগুলোকে। শিক্ষার্থীদের এই অভূতপূর্ব ভূমিকায় সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকেও অকুন্ঠ সমর্থন জানানো হচ্ছে। তারা নানা স্থানে শিক্ষার্থীদেরকে রুটি, পানি ও ছাতা দিয়ে উৎসাহিত করেছে। তবে শিক্ষার্থীদের রাজপথে নেমে আসায় পরিবহন কােম্পানিগুলো ঘাড় ঘুরিয়ে বসেছে। নিরাপত্তার অজুহাতে তারা রাস্তায় বাস নামাচ্ছে না। রাজধানীর সাথে অনেক রুটের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় যাত্রী সাধারণ ভোগাস্তিতে পড়ে। কথা হচ্ছে এই আন্দোলন দিয়ে হয়তো আমাদের সিস্টেম পুরোপুরি বদলে যাবে না।



[মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি]


ছাত্ররা সারা জীবন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বও পালন করতে পারবে না। তাই ‌‌‌‌'রাস্তার ট্রাফিক পুলিশ পুরোপুরি দুর্নীতিহীন হয়ে যাবে, অদক্ষ চালক দিয়ে গাড়ি চালানও একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে, বিআরটি এর অসাধু কর্মকর্তা ও দালালরা পুরোপুরি সাধু হয়ে যাবে'- এমনটা আশা করা হয়তো ঠিক হবে না। কিন্তু এদেশের মানুষ কেমন রাস্তা চায়, কেমন চালক চায়, কেমন ট্রাফিক পুলিশ চায়, কেমন প্রশাসন চায় সেই বার্তাটা রাষ্ট্রযন্ত্রের কানে পৌঁছে দিতে পেরেছে। সেই সাথে তারা দেখিয়ে দিয়েছে আন্তরিকতা থাকলে আসলেই রাস্তায় শৃঙ্খলা আনয়ন করা যায়।


এখন শিশুদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি আন্তরিকতার সাথে দেশের স্ব-স্ব বিভাগগুলো কাজ করে তবে নিশ্চয় দেশের এই ঘুনে ধরা সিস্টেম পাল্টাতে বাধ্য। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৭ বছর পার হয়ে গেলেও এই দীর্ঘ সময়ে বড়রা যা করতে পারেনি ছোটরা তা করে দেখিয়েছে। তাই ছোটদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে দোষের কিছু নেই, লজ্জারও কিছু নেই। এখন সকলের উচিত এই শিক্ষাকে বাস্তবজীবনে নিয়ে আসা।


[the_ad id="886"]

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three