রংপুর এক্সপ্রেস: পবিত্র ইদুল আযহাকে ঘিরে আনন্দে মেতে উঠছে রংপুরবাসী। ইদের ছুটিতে রংপুরের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সব বসয়ী মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে বিনোদন স্পট জুড়ে বইছে নির্বিঘ্নে ইদ উদযাপনের বার্তা। ভিন্ন জগত, তাজহাট জমিদার বাড়ি, চিড়িয়াখানা, সুরভি উদ্যান, চিকলি পার্ক, প্রয়াস সেনাপার্কসহ প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রই মানুষের উপস্থিতিতে সরব হয়ে ওঠেছে। ইদের দিন ও ইদের দ্বিতীয় দিন আজ বৃহস্পতিবার রংপুরের বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র ঘুরে নারী, শিশুসহ নানান শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়।
আজ সকালে রংপুর চিড়িয়াখানার টিকেট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন দেখা যায়। সবাই দাঁড়িয়ে আছেন টিকিটের অপেক্ষায়। সেখানে টিকিটের অপেক্ষায় থাকা দর্শনার্থী সোহেল রশীদ জানান, ইদকে ঘিরে এখানে পশু-পাখির নতুন কোনো সংযোজন নেই। তবে কর্তৃপক্ষ প্রত্যেকটি পশু-পাখি ও গাছগাছালির পরিচিতি তুলে ধরে যে কাজটি করেছেন তা অনেক সুন্দর ও তথ্যমূলক। সবুজে ঘেরা নিরিবিলি মনোরম পরিবেশ রয়েছে এর ভেতরে।
নগরীর নিসবেতগঞ্জ ঘাঘট নদের তীর ঘেঁষে রয়েছে সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘প্রয়াস’ বিনোদন পার্ক। পাখির কিচিরমিচির শব্দের খেলাও কানে বাজবে। ইচ্ছে হলে পানিতে ভেসে বেড়াতে পারেন পালতোলা বা ডিঙি নৌকায়। এই পার্কেও টিকিটের জন্য ভিড় রয়েছে। এর ভেতরে রয়েছে কৃত্রিমভাবে তৈরি গোরিলা, বাঘ, ভাল্লুক, জিরাপ, ঘড়িয়াল, জেব্রা, কুমির, সাপ, বানর, হরিণ, ব্যাঙ, পাখিসহ গ্রামীণ ঐহিত্যের কলস নিয়ে নারী, রূপকথার পরি, শিশুদের ডরিমন।
দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায় রংপুরের তাজহাট জমিদার বাড়িতে। অনিন্দ্যসুন্দর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এই জমিদার বাড়িটি। এখানকার সিঁড়ি শ্বেতপাথরের, যা ইতালি থেকে আনা হয়েছিল। সিঁড়িটি নিচতলা থেকে দোতলা পর্যন্ত উঠে গেছে। চোখ জুড়ানো শৈল্পিক কারুকার্য রয়েছে জমিদার বাড়িকে ঘিরে। বিশাল আয়তনে ঘেরা সবুজ শ্যামল ফুলে ফুলে ভরা। এখানেও রয়েছে দর্শনাথীদের ভিড়।
এছাড়াও রংপুর মহানগরীর কালেক্টরেট সুরভি উদ্যানে রয়েছে শিশু-কিশোর ও উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের ভিড়। ইদ আনন্দে মেতে ওঠা চিত্তবিনোদন প্রিয় মানুষের আনাগোনা রয়েছে শতবছরের ইতিহাসের সাক্ষী প্রাচীন বিদ্যাপীঠ কারমাইকেল কলেজে। এই কলেজে দিগন্তজোড়া খোলা মাঠে ঘুরে বেড়ালে মনটা জুড়িয়ে যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও আগে প্রতিষ্ঠিত কারমাইকেল কলেজে রয়েছে শতবর্ষী বিরল কাইজেলিয়া বৃক্ষটি। এর পাশেই রয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ইদকে ঘিরে এখানেও আড্ডাপ্রিয়দের ভিড় রয়েছে।
এছাড়াও ফ্যান্টাসি জোন, মহিপুরঘাট, তিস্তা সড়ক সেতু পয়েন্ট, বেগম রোকেয়ার বাসভন, পীরগঞ্জের আনন্দনগর, কবি হেয়াত মাহমুদের সমাধি, মনোমুগ্ধকর বিশাল বিল ও সাড়ে তিনশ বছরের একটি প্রাচীন বৃক্ষরাজা, নীলাম্বরের জলমহালসহ প্রায় সকল স্পটে বিনোদন পিপাশু মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।