খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে আবারও উত্তেজনা

admin May 24, 2019

রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক:
খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে ধর্মঘট প্রত্যাহারের একদিন পর আবারো উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ দিনে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বকেয়া মজুরি না দেওয়ায় এ উত্তেজনা দেখা দেয়। উত্তেজিত শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট স্টার ও পিপলস্ পাটকলের কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করেছেন।


এর আগে সকালে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করেন পাটকল শ্রমিক নেতারা। কিন্তু সেখানে বকেয়া মজুরি পরিশোধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন বলেন চলতি সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া দুই সপ্তাহের মজুরি ও আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া সব মজুরি পরিশোধের শর্তে শ্রমিকরা এক সপ্তাহের জন্য আন্দোলন স্থগিত করে। শ্রমিকদের ৯ থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে।


বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ দিন মজুরি পরিশোধ করার কথা থাকলেও বিজেএমসি ও পাটকলগুলো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ কারণে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা সকালে কয়েকটি মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। পরে মিলের উৎপাদন পুনরায় চালু হলেও দুপুরের দিকে ক্রিসেন্ট স্টার ও পিপলস্ পাটকলের কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে শ্রমিকরা। বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী সাজ্জাদ হোসেন জানান ২১ মে জেলা প্রশাসনের বৈঠকে বকেয়া মজুরি পরিশোধে আমাদের (বিজেএমসি) চেষ্টা করতে বলা হয়। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো টাকা নেই।


বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ক্রিসেন্ট প্লাটিনাম স্টার খালিশপুর দৌলতপুর ইস্টার্ন আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলে স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন ১৩ হাজার ১৭০ জন এবং বদলি শ্রমিক সংখ্যা ১৭ হাজার ৪১৩ জন। শ্রমিকদের ৯ থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তাদের পাওনার পরিমাণ প্রায় ৬০ কোটি টাকা।


বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন পাটপণ্য উৎপাদন ক্ষতি হয়েছে। পাটকলগুলোর সার্বিক বিষয় বিজেএমসিতে জানানো হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কাজ চলছে।


উল্লেখ্য পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ বকেয়া মজুরি পরিশোধ জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন রোয়েদাদ-২০১৫ কার্যকর অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহাল সব মিলে শর্টআপের অনুকূলে শ্রমিক-কর্মচারীদের শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগ ও স্থায়ীকরণসহ ৯ দফা দাবিতে শ্রমিকরা ১৩ মার্চ থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।


গত ৭ এপ্রিল বিজেএমসি থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া মজুরি বেতন প্রদান ও ১৮ মে’র মধ্যে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এরপর শ্রমিকরা অবরোধ ও কর্মবিরতি স্থগিত করে কাজে যোগ দেন। ২৫ এপ্রিল এক সপ্তাহ সময় নেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এরপর ২ মে মজুরি না দেওয়ায় ৫ মে থেকে মিলে উৎপাদন বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। পাশাপাশি ৬ মে থেকে প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ শুরু করেন।


ঢাকায় শ্রমিক নেতাদের বৈঠকের ঘোষণা অনুযায়ী ১৩ মে থেকে সারাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে এ কর্মসূচি একযোগে শুরু হয়। এ অবস্থায় শ্রমিকরা ২২ মে থেকে প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দেন। কিন্তু ২১ মে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর শ্রমিকরা আলোচনা করে কর্মসূচি সাত দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three